জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে শেখ রাসেল দিবস পালন

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

 

জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে (জেসিপিএসসি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের শুভ জন্মদিন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয় পালন করা হয়েছে।

‘শেখ রাসেল দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল আনন্দ র‌্যালি, শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বৃক্ষরোপণ, কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, হাতের সুন্দর লেখা ও রচনা প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা প্রকাশ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা এবং শেখ রাসেল স্মৃতি ফুটবল প্রতিযোগিতা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর দপ্তর সিলেট সেনানিবাসের জিএসও-২ (শিক্ষা) মেজর মো. জাহাঙ্গীর আলম, এইসি ।

উপস্থিত ছিলেন জেসিপিএসসি’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হান্নান। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সকালে ১১:৩০ আনন্দ র‌্যালি শেষে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

সকাল ৯ টায় শেখ রাসেল স্মরণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সকাল ১০ টায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ১১ টায় প্রতিষ্ঠানের মাল্টিপারপাস শেডে ‘শেখ রাসেল স্মরণসভা’ অনুষ্ঠিত হয়।

জেসিপিএসসি’র একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইলোরা রহমান ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিম আহমেদ সামিনের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম

এবং ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সালে শহিদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত

করেন সহকারী শিক্ষক ইমদাদুল হক জুবায়ের। শেখ রাসেলের জীবনী নিয়ে বক্তব্য রাখেন- সহকারী শিক্ষক আতাউল্লাহ সানী, একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সেঁজুতি পাল চোধুরী ও ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিন আল সাবা। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৬৪ সালের আজকের দিনে ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত ধানমণ্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনকে আলোকিত করে শেখ রাসেলের জন্ম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় খ্যাতিমান গণিতবিদ, দার্শনিক ও নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে পরিবারের নতুন সদস্যের নাম রাখেন রাসেল

শৈশব থেকেই দুরন্ত ও প্রাণবন্ত রাসেল ছিলেন পরিবারের সবার অতি আদরের। শেখ রাসেলের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ বাবা মুজিবকে ছাড়াই কেটেছে তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময়। কারণ, বাবা শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক বন্দি হয়ে কারগারে ছিলেন দিনের পর দিন।

আর চোখের সামনে বাবাকে দেখতে না পেয়ে মা ফজিলাতুননেসা মুজিবকে একপর্যায়ে রাসেল ‘আব্বা’ বলে সম্বোধন করতেন। এ চাপা কষ্ট যেমন অনুভব করতেন শিশু রাসেল ঠিক তেমনি অনুভব করতেন বাবা মুজিবও।’ তিনি আরও বলেন, ‘মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর ছায়াই যেন ফুটে উঠেছিল শিশু রাসেলের মাঝে।

শিশু রাসেলের কথাবার্তা ও আচার-আচরণে সর্বদাই যেন প্রতিফলিত হতো বাংলার মাটি ও মানুষের ছায়া। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাসেলের এই ইচ্ছা মনের কোণে দানা বাঁধতে শুরু করে। যে শিশুর চোখের তারায় ছিল অপার সম্ভাবনা, সে শিশুকেই বিকশিত হওয়ার আগেই ঝরে যেতে হলো।

তাই বাঙালির কাছে শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের মতোই অন্তহীন বেদনার এক মহাকাব্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনিরা বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। ।’

তাই ইতিহাসের শোকাবহ দিন ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে শিশু রাসেলকেও মাত্র ১০ বছর ১০ মাস বয়সে ঘাতকদের প্রচণ্ড নিষ্ঠুরতার নির্মমতম শিকার হতে হয়েছিল।’ 

তিনি বলেন, ‘শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু-কিশোর, তরুণ, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে একটি আদর্শ ও ভালোবাসার নাম। অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকার বঞ্চিত আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম-গঞ্জ-শহর তথা বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জনপদ-লোকালয়ে শেখ রাসেল আজ এক মানবিক সত্তায় পরিণত হয়েছে।’

শেখ রাসেল দিবস- ২০২৩ অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আশরাফুর রহমান বাপ্পী এবং সদস্য হিসেবে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকমণ্ডলী।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।