অবিলম্বে পীরপুর-গরিপুর-শেখপাড়া গ্রামকে নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করুন: বাসদ

বর্ষা মৌসুমের আগেই পীরপুর-গরিপুর-শেখপাড়া গ্রামকে নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করা, ভাঙ্গনে ক্ষডুগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও সিলেট অঞ্চলে বন্যা সমস্যার সমাধানের দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে ৫জুন সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টায় টুকেরবাজারের পীরপুর গ্রামে নদী ভাঙ্গন এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হোসেন এর সভাপতিত্বে ও বাসদ সিলেট জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমন এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর, শ্রমিক নেতা আবু তালিব।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাসদ সিলেট জেলা সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল, গ্রামবাসীর পক্ষে আবুল খায়ের, সাব্বির আহমেদ, সিরাজুল হক, মকবুল হোসেন, শাহান উদ্দীন, আমিরুল হক, আলী হোসেন, আনোয়ার হোসেন, নজির হোসেন, আনোয়ার হোসেন কুটি, ছায়েম আহমদ, জুনেদ আহমদ, হাজী মোক্তার আহমদ, আব্দূল ফাত্তাহ প্রমূখ ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম বৃষ্টিবহুল এবং হাওরবেষ্টিত অঞ্চল। বৃষ্টি এবং উজান থেকে আসা ঢলের পানির কারণে দীর্ঘদিন থেকে সুরমা নদীতে ভাঙ্গন বাড়ছে। ইতিমধ্যে ভাঙ্গনে টুকেরবাজার এলাকার(বর্তমান সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর ৩৯নং ওয়ার্ড) পীরপুর,শেখপাড়া, গরিপুর গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে। ইতিমধ্যে এসব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বাজারসহ কয়েক শত বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে এবং কয়েক শত পরিবার নদী ভাঙ্গনে হুমকির মধ্যে আছে। এসব এলাকার অনেকেই সর্বস্ব হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিযেছেন এবং যাদের যাওয়ার কোন জায়গা নেই তারা এলাকায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠার নিয়ে বসবাস করছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই এই ভাঙ্গন চলছে কিন্ত এখনও এসব গ্রাম নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার জন্য তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

 

বক্তারা বলেন, একদিকে সরকার বিশ্ব পরিবেশ দিবস ব্যাপক ভাবে পালন করলেও পরিবেশ রক্ষার তেমন কোন উদ্যোগ নেই। গতবছর ইতিহাসের প্রলয়ঙ্করী বন্যায় সিলেট অঞ্চল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।বন্যা প্রাকৃতিক হলেও এর মারাত্মক দুর্ভোগের জন্য দায়ী মনুষ্য সৃষ্ট কারণ। গত ৫০ বছরে দূষণ, ভূমিদস্যুদের আগ্রাসন, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ন, আবাসন , সেতু, কালভার্ট ও সুইসগেট নির্মাণের ফলে দেশের নদীগুলোর স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও ভরাট করা হয়েছে খাল, হাওর ও জলাশয়। ফলে জলাবদ্ধতা বাড়ছে এবং বন্যা সমস্যা দীর্ঘস্হায়ী রুপ নিচ্ছে । সাম্প্রতিক নদী ভাঙ্গন ভাংগন সমস্যাকে আরও তীব্র করেছে।

বক্তার বলেন, নগরীর পার্শ্বে সুরমা নদীর ১৮কিলোমিটার ড্রেজিং এর ৫০কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও এখনো সেই কাজের অগ্রগতি তেমন নেই। ইতিমধ্যে আন্দোলনের কারণে জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের র্ককর্তারা ভাঙ্গন রোধে প্রতিশ্রæতি দিলেও এখনো কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই।

বক্তারা বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পীরপুর-গরিপুর-শেখপাড়া গ্রাম কে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং সিলেট অঞ্চলের নদীগুলো পরিকল্পিত ড্রেজিং করা, অপরিকল্পিত নগরায়ন-উন্নয়ন বন্ধ,

নদী-খাল-জলাশয় দখল-ভরাট, পাহাড়-টিলা কাঠাসহ প্রকৃতি বিনাসী সকল কর্মকান্ড বন্ধ এবং বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করার আহ্বান জানান।

 

 

—বিজ্ঞপ্তি ।।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।