সিসিক নির্বাচন: মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক::

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল আজ মঙ্গলবার (২৩শে মে)। এদিন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

সিলেট জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নিয়ে নগরীর মেন্দিবাগস্থ জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদিরের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী।

পরে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা’য়ালার শোকরিয়া আদায় করে সিলেট মহানগরীর সর্বস্থরের জনসাধারণ শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের সেবার ব্রত নিয়ে আমি মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছি।

আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের মেয়র পদে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন সেজন্য তাকেও আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি মানুষের জন্য রাজনীতি করি মানবসেবার জন্য রাজনীতি করি।

আজ মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সিলেটের সর্বস্থরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে সবার জন্য কাজ করার সুযোগ দিবেন।

 

তিনি বলেন গত ১০ বছরের অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে সিলেটের অনেক ক্ষতি হয়েছে। নগরবাসীকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সবাই তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে মেয়র হিসাবে নির্বাচিত করলে অবশ্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব দুর্ভোগ লাঘব করা হবে।

 

নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সুরমা নদী ড্রেজিংয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। মশার উপদ্রব রোধে প্রজনন কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করা হবে। ময়লা আবর্জনা মুক্ত রাখা হবে। এ কাজে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী সমাধান করবো। আর তা করা হবো নাগরিক মতামতের ভিত্তিতেই। নগরভবন সাধারণ মানুষের জন্য আরও বেশি নাগরিকবান্ধব হিসাবে যাতে কাজ করে, যে কেউ যাতে তার সমস্যা নিয়ে সহজেই নগরভবনে যেতে পারেন এবং তাদের সমস্যার কথা বলতে পারেন তা নিশ্চিত করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী নৌকার বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ।

 

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মনোনয়নপত্র জমাদানকালে তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী,

 

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সুব্রত পুরকায়স্থ, অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার প্রমুখ।

 

উল্লেখ্য, আগামী ২১শে জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র বাছাইর শেষ তারিখ ২৫শে মে। প্রত্যাহার ১লা জুন।

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।

২০১৩ সাথে তৃতীয় ও ২০১৮ সালে চতুর্থ নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী।

চারটি নির্বাচনেই মূল প্রতিদ্বদ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। অন্য দলীয় বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সামান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেননি।

৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীর মোট ওয়ার্ড ৪২টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ ও নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৪টি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।