বিএনপি-জামাত অগ্নিসন্ত্রাসের প্রবর্তক: শেখ পরশ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ
আজ ১৮ এপ্রিল, ২০২৩ইং, মঙ্গলবার, ভাসানটেক সরকারি কলেজ মাঠে (বিআরপি সংলগ্ন) পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’র ঈদ উপহার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, শেখ ফজলে শামস্ পরশ-চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম-সভাপতিম-লীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়মী লীগ। সঞ্চালনা করেন, আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল-সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ১৭ই এপ্রিল ছিল মুজিবনগর সরকার দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য দিন এই ১৭ই এপ্রিল। এই দিন মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুজিবনগর সরকারের অধীনে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। যেখানে বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি সৃষ্টি করার পেছনে এই মুজিবনগর সরকার অসাধারণ কূটনৈতিক সফলতা প্রদর্শন করেছিল।
যেসখানে তিনি কেন অস্বীকৃতি জানিয়েছিল সেব্যাপারে যথেষ্ট প্রশ্ন থাকে এবং জিয়াউর রহমান যে একজন চর এবং একজন ভ- মুক্তিযোদ্ধা সে ধারনাই এর কারণে প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন প্রজন্মকে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন জিয়াউর রহমানের পদ্দার আড়ালে কুখ্যাত ভূমিকা অনুসন্ধান করে তা উন্মোচন করার আহ্বান জানাচ্ছি। সেকারণেই আমি মনে করি, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট,
মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালির গৌরবগাথা ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জানতে হবে। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আগুনের ঘটনা আমাদেরকে ব্যথিত করছে এবং জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনা নাশকতার ষড়যন্ত্র কিনা সেটা সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করছি? ফখরুল সাহেবরা ২০০৪ সালেও বলেছিল: “২১ এ আগস্ট শেখ হাসিনা নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে এসেছিল”।
এখন তিনি বলছেন, “আমরা নিজেরাই নাকি আগুন লাগিয়েছি।” আমি অবাক হই নাই তাদের এই রকম অসংলগ্ন এবং অসংবেদনশীল কথা শুনে। যে দলের নেত্রী ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন তাদের রুচি সম্বন্ধে আমার জানা আছে। জনগণ অনুমান করে যে বিএনপি দায়ী কারণ তারা যাদের সাথে শরিক করেছে জামাত তারাতো আগুন দেয়ার প্রবর্তক; ১৯৭১ সাল তার প্রমাণ। ৭১ সালে এই জামাত আমাদের গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে।
২০১৪ সালেও এই জামাতকে সাথে নিয়ে তারা অগ্নি সন্ত্রাস করেছে। সুতরাং তাদেরকে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে। তিনি বলেন, ভোটে জিততে পারবে না বলে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনে আসার তাদের কোন যোগ্যতা নাই। তারা নির্বাচনে জিততে পারবে না তারা জানে। কারণ তারা গত ১৪ বছর মানুষের পাশে যায় নাই। এই যে এত বড় করোনা গেল, সারা বিশ্বে মহামারির, এই যে রমজান গেল কিন্তু জনগণের পাশে দাঁড়ায় নাই।
তাই তারা নির্বাচনে ভয় পায়। বিএনপি মনে করে তারা নির্বাচনে না গেলে সংসদ নির্বাচন বৈধতা পাবে না। আমি বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই এর আগেও তারা নির্বাচন বয়কট করেছে। কিন্তু তাতে বৈধতার কোন সংকট হয় নাই। বরঞ্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। কোন একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বৈধতার কোন সংকট হয় না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামাত ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত এদেশের মানুষের উপর যেরকম অত্যাচার করেছেন, আওয়ামী লীগের ভোটারদেরকে চিহ্নিত করে আপনারা ঘরে ঢুকে পাকিস্তানী কায়দায় হত্যা করেছেন। যাতে এই সকল নির্যাতিত জনগণ বিচার না চাইতে পারে সেই জন্যই আপনারা বিচারালয়ে বোমাবাজি করেছেন বিচার প্রাপ্য জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য। ভয়-ভীতি দেখিয়ে জনগণকে শাসন করতে চান আপনারা?
আপনারা সেদিন দুইজন জজকে হত্যা করে সারা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা এবং আইনের শাসন স্তব্ধ করে দিয়েছেন। আপনাদের অত্যাচার-নির্যাতনের বিচার যেনও এদেশের মানুষ না চাইতে পারে, সেই জন্যই আপনারা সুপরিকল্পিতভাবে এই নৈরাজ্য এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। আমি বলি বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল, যারা নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তানী গোয়ান্দা সংস্থা এবং এলিট শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে।
সুতরাং বিএনপির রাজনীতি এদেশে নিষিদ্ধ করা উচিত বলে আমি মনে করি। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে যে ষড়যন্ত্র চলছে সেটা এ দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এদেশের মেহনতি কর্মজীবী মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা আমাদের বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জানেন, আপনারা তাঁর শক্তি। তাই তিনি বার বার আমাদের জনগণের কাছেই পাঠান। আর আমরাও আপনাদের কাছে বার বার ফিরে আসি। আপনারাই আমাদের ভরসা, আমাদের প্রধান শক্তি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, যারা সংসদ মানে না, আইন মানে না, গণতন্ত্র মানে না, তাদের সাথে কোন আপোস নাই। নির্বাচন হবে এ বছরের শেষের দিকে, এই নির্বাচনে যারা আসবে ভালো, কাউকে আমরা দাওয়াত দিয়ে আনবো না। এই দায়িত্ব আওয়ামী লীগ নেয় নাই। যারা আসবে তাদের নিয়ে নির্বাচন হবে, সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন হবে, সময় মত নির্বাচন হবে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন পরিচালনা করবেন, আমরা তাদের সহযোগিতা করবো। আর যদি বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার জন্য উল্টোপথে কোন কাজ-কর্ম করে তাহলে কিন্তু জনগণ আর বসে থাকবে না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া বলেন, করোনার মহামারিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে ছিল, ঠিক সেই একইভাবে এখনও তারা সাধারণ মানুষের সাথেই রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে যখন ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে, তার ধাক্কা আমাদের দেশেও লেগেছে।
কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষক ভাইয়েরা যেন ফসল সঠিকভাবে উৎপাদন করতে পারে সেজন্য সারের মূল্য বৃদ্ধি করা হয় নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের কথা চিন্তা করে কৃষি ক্ষেত্রে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছেন যেন ফসলের উৎপাদন স্বাভাবিক থাকে।
সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি আমলের সন্ত্রাসীরা আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। ঈদের পর থেকে এলাকাভিত্তিক বিএনপির তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। বিএনপি আবারও আগুন সন্ত্রাসে মেতে উঠেছে। আজকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটছে তাতে আমি মনে করি বিএনপি-জামাতের হাত রয়েছে। কারণ বিএনপি-জামাতের রাজনীতি মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষের জানমালের ক্ষতি করণ, সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা।
কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে এদেশের মাটির শিকড় থেকে গড়ে ওঠা সংগঠন। মানুষের সেবা করাই আমাদের ধর্ম, আমাদের শিক্ষা। তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে আমার মা-বোনদের কাছে অনুরোধ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এনামুল হক খান, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা।
আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ নবী নেওয়াজ, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জহির উদ্দিন খসরু, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ রাশেদুল হাসান সুপ্ত,
উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সামছুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।