রমজান মাসে শ্রমিক ছাটাই বন্ধ ও ঈদ বোনাসের দাবিতে কুলাউড়া ও জুড়ীতে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ মিছিল
আসন্ন রমজান মাসে বিনা বেতনে হোটেল শ্রমিকদের ছাটাই বন্ধ, ২৫ রমজানের মধ্যে সকল শ্রমিকদের মাসিক বেতনের সমপরিমান উৎসব বোনাস প্রদান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ মজুরি এবং ৮ ঘন্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রমআইন কার্যকর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে কুলাউড়া ও জুড়ী হোটেল শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। ১৮ মার্চ বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের কুলাউড়া উপজেলা কমিটি ও জুড়ী উপজেলা কমিটির উদ্যোগে পৃথক পৃথকভাবে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
১৮ মার্চ সন্ধ্যা ৭ টায় কুলাউড়া হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের উত্তরবাজার, দক্ষিণবাজার ও স্টেশন রোড প্রদক্ষিণ করে চৌমুহনা চত্ত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। কুলাউড়া হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের আহবায়ক মোঃ মিজান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্টিত বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহিন মিয়া, কুলাউড়া হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম-আহবায়ক আশিক খান প্রমূখ। এদিকে রাত ৮ টার সময় জুড়ী উপজেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে জুড়ী উপজেলা চত্ত্বর(নাইট চৌমুহনা) এলাকার কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
পরে উপজেলা চত্ত্বরে জুড়ী উপজেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হোটেল শ্রমিকনেতা শাহিন মিয়া, তাজুল ইসলাম, জড়ী উপজেলা রাইস মিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক শহিদ আহমদ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতিতে হোটেল শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। চাল, ডাল, তেল, লবন, পিয়াজ, আদা, রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতিতে হোটেল শ্রমিকদের বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়ছে। তার উপর জনজীবনের সমস্যাকে গুরুত্ব না দিয়ে গ্যাস, বিদ্যুত, জ্বালানি তেলের মূল্য অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি ঘটলেও শ্রমিক-কৃষক-জনগণের আয় বাড়েনি। হোটেল রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের অবস্থা আরও দুর্বিষহ। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কথা বলে মালিকরা প্রতিটি খাদ্যের দাম বাড়িয়েছেন কিন্তু শ্রমিকদের মজুরি একটি টাকাও বাড়াননি। সরকারও মালিকদের স্বার্থরক্ষায় ৫ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করেননি।
সরকারের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে হোটেল মালিকরাও দেশের শ্রমআইন ও রাষ্ট্রীয় আইনেরও তোয়াক্কা করেন না। যার কারণে হোটেল শ্রমিকদের সকল প্রকার আইনী অধিকার হতে বঞ্চিত করা হয়। আসন্ন রমজান মাসে ব্যবসা মন্দার অজুহাতে বেআইনীভাবে হোটেল শ্রমিকদের ছাটাইয়ের তৎপরতা চলছে।
সমাবেশ থেকে আসন্ন রমজান মাসে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ঈদুল ফিতরে মাসিক বেতনের সমপরিমাণ উৎসব বোনাস প্রদান এবং ৮ ঘন্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রমআইন কার্যকর, অবিলম্বে হোটেল-রেস্টুরেন্ট সেক্টরে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে বাঁচার মতো মজুরি নির্ধারণ, দফায় গ্যাস-বিদ্যুত-জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ করা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো এবং স্বল্পমূল্যে রেশনিং চালুর দাবি জানান।
=বিজ্ঞপ্তি ।।