নারীর সম-অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করুন: সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা বৃহস্পতিবার ৯ মার্চ বিকাল ৪টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম সিলেট জেলা আহ্বায়ক মাসুমা খানম এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর, জেলা সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম এর সদস্য আশু রানী শর্মা, জাহানারা বেগম, সালেহা আক্তার, মুন্নি বেগম, প্রমূখ।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ৮মার্চ ২০২৩ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ১১৩তম বার্ষিকী। নারীর প্রতি বৈষম্য, জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক নিপীড়ন এর বিরুদ্ধে নারীর সম-অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের সংগ্রামে নারী দিবস এক অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্কের সুই কারখানার নারী শ্রমিকেরা ১২/১৬ ঘন্টা শ্রম, অমানবিক কাজের পরিবেশ, মজুরি বৈষম্য, অভিবাসী ও কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং ভোটাধিকারের দাবিতে ধর্মঘট পালন করেন।

 

হাজার হাজার নারীর মিছিলে পুলিশ নৃশংস হামলা চালালে আহত ও গ্রেফতার হন অসংখ্য নারী শ্রমিক। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের দেশে দেশে, চলতে থাকে বছরের পর বছর। ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে ৮ ঘন্টা কর্মদিবসের দাবিতে গড়ে ওঠে ঐতিহাসিক মে দিবসের রক্তাক্ত শ্রমিক অভ্যুত্থান।

 

১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলনে জার্মান কমিউনিস্ট নেত্রী ক্লারা জেটকিন বহু সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ৮ মার্চকে নারী দিবস ঘোষণার প্রস্তাব করেন। রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের রূপকার মহামতি লেনিনের উদ্যোগে এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত হয়। তখন থেকে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে দুনিয়ার দেশে দেশে পালিত হয়ে আসছে।

 

বক্তারা আরও বলেন, নারী দিবস ঘোষণার ১১৩ বছর ও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ৫২ বছর পরও আমাদের দেশে নারীরা বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার। অধিকাংশ কর্মক্ষেত্রে আজও নারীরা সমকাজে সম-মজুরি পান না, নির্যাতনের শিকার হন এবং কর্ম পরিবেশ স্বাস্থ্যকর নয়। ফলে দেখা যায়, নারী দিবসের যে মূল দাবিসমূহ তা এখনও অপূরিত।

 

নারীর অধিকার রক্ষা, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি যে বৈষম্যমূলক সমাজের কারণে মানুষের উপর শোষণ নির্যাতন চলছে প্রতিনিয়ত তার বিরুদ্ধেও সচেতন সংগ্রাম গড়ে তোলা অত্যাবশ্যকীয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের চেতনার মূলেও ছিল শোষণ বৈষম্যহীন সাম্য সমাজ গড়ার আহ্বান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।