শ্রমিকনেতা আবুল কালাম আজাদ-এর ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত
এদেশের শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি জনগণের অকৃত্রিম বন্ধু, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং চট্ট: ১৯৩৩)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন (রেজি: নং বি:২০৩৭) এর সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ন সম্পাদক, হোটেল সেক্টরে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও শ্রমআইন বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাবেক আহবায়ক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ (রেজি: নং বাজাফে: ০৫) এর সিলেট জেলা শাখার সাবেক সহ-সভাপতি এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক আপোসহীন সংগ্রামি শ্রমিকনেতা আবুল কালাম আজাদ-এর ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত।
শুক্রবার ৩মার্চ সকাল ১০টায় মানিকপীরস্থ সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। কর্মসূচীর দ্বিতীয় অধিবেশন বিকেল ৪টায় সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদ মিনারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে আবুল কালাম আজাদের স্ররণে দাঁড়িয়ে ০১ (এক) মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ছাদেক মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আনছার আলীর পরিচালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রিয় কমিটির সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা রজত বিশ^াস।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি সুরুজ আলী, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার সহ-সভাপতি আবুল ফজল, সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম, জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সভাপতি উসমান গণি, সিলেট জেলা কৃষক সংগ্রাম সমিতির যুগ্ন আহবায়ক সুজন মিয়া, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহিন মিয়া, সিলেট জেলা প্রেস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন আবুল কালাম আজাদ এর বড় ছেলে বদরুল আজাদ।
বক্তারা বলেন, সাদামাটা জীবন-যাপন ও সহজ সরল ব্যবহার ও সুবক্তার কারণে আবুল কালাম আজাদ অতি সহজেই শ্রমিকদের সাথে মিশতে পারতেন এবং সাধারণ মানুষের কাছে তার গ্রহনযোগ্যতা অর্জন করেন। তার আন্তরিক ব্যবহারের জন্য শ্রমিকদের কাছে তিনি প্রানপ্রিয় নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন।
তিনি শ্রমিক কৃষক জনগণের রাষ্ট্র তথা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। পাশাপাশি হোটেল সেক্টরে শ্রমআইন বাস্তবায়ন হোটেল শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান, বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ ও শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমৃত্যু স্বোচ্ছার ছিলেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, জনগণের জীবন-জীবিকার সকল প্রয়োজনীয় বিষয় রাষ্ট্রীয় দলীয় ও আমলা, ব্যবসায়ীদের অবাধ লুটপাট ও লাগামহীন বাণিজ্য ক্ষেত্রে পরিণত করে চলছে। সম্পদের বৈষম্য বিপদ সীমা অতিক্রম করছে। সরকারের এমপি, মন্ত্রী, আমলা ও ব্যবসায়ীরা জনগনের ট্যাক্সের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করছে। অপরদিকে দেশের শ্রমিক-শ্রমজীবী-মেহনতি জনগণ অনাহার-অর্ধাহার, অভাব-অনটন, দুঃখ কষ্টে সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। চাল-ডাল-তেল, পেঁয়াজ, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ঔষধ-চিকিৎসা সামগ্রী, স্কুল কলেজ বিশ^বিদ্যালয়ের ভর্তি-বেতন ও শিক্ষা উপকরণের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। জিনিসপত্রের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। সেই তুলনায় শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষের আয় ও মজুরি বাড়েনি।
সাম্রাজ্যবাদের দালাল আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কেউ সাম্রাজ্যবাদের আর্শিবাদ নিয়ে ক্ষমতা আরো দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা করছে অপর পক্ষ ও সাম্রাজ্যবাদের আর্শিবাদে নতুন করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। শ্রমিক-কৃষক-জনগণের মূল-সমস্যা আড়াল করে দালাল আওয়ামী জোট ও বিএনপির জোট এবং এদের সাথে সর্ম্পকিত জাতীয় পার্টি, বাম নামধারী সুবিধাবাদী লেজুড়বৃত্তিক দলগুলোও নির্বাচনী ঢামাঢোলের বাজনা বাজাচ্ছে।
কেউবা বর্তমান সরকারের অধীনে কেউবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বুলি আওড়াচ্ছে। যেই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমাদের মত নয়াউপনিবেশিক আধা-সামন্তবাদী দেশের জনগণের সমস্যা সমাধান হওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এক দালালের পরিবর্তে আরেক দালাল অর্থাৎ শুধুমাত্র ক্ষমতার পালাবদলই হবে। দেশের বর্তমান অবস্থায় প্রয়োজন শ্রমিক-কৃষক-মেহণতি জনগণের লাগাতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলে শ্রমিক কৃষকের বাসপোযোগী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়া। জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলে আবুল কালাম আজাদের অসমাপ্ত কাজ জাতীয় গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করার আহবান জানান।
=বিজ্ঞপ্তি ।।