সুরমা টাইমস ডেস্ক :
সিলেটে চাঞ্চল্যকর অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম হত্যা মামলায় নিহতের ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের ৩ বছর কারাদণ্ড এবং আরেক আসামিকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (০৬ই মে) দুপুরে সিলেটের বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. শাহাদাৎ হোসেন প্রামাণিক এ রায় ঘোষণা করেন।
অত্র আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আনসারুজ্জামান ও আদালতের পেশকার আহমদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন – নগরের মীরবক্সটোলার আজাদি ১১০ বাসার বাসিন্দা মসুদ ওরফে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না। তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার নিহত অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলামের ছোট ছেলে।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে জাহের আলী ও সুনামগঞ্জের ছাতক থানার রাউলি গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে আনসার আহমদ।
পাশাপাশি রায়ে তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, আরেকটি ধারায় ৩ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মামলার ওপর আসামি বোরহান উদ্দিনকে ২০১ ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আরেক আসামি ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করা হয়।
মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ১৭ই জুলাই পবিত্র শবে বরাতের রাতে অনুমান সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলামকে নিজ বাসায় হত্যা করা হয়।
হত্যার পর রাতেই মরদেহ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজি এলাকায় সুরমা নদীতে নিয়ে ফেলা হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যায় নিহতের বড় ছেলে মাহমুদ আহমদ চৌধুরী বাদী হয়ে সহোদর মসুদ ওরফে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্নাসহ ৫ জনের নামোল্লেখ করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন কোতোয়ালি মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) খায়রুল ফজল।
পর্যায়ক্রমে মামলাটি র্যাব-৯-এ স্থানান্তর হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইদ্রিছ আলী ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র (নং-৯১) দায়ের করেন।
এরইমধ্যে গ্রেফতারের পর মামলার আসামি বুরহান উদ্দিন ও আনসার আহমদ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন।
২০১৫ সালের ১৫ই মে সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার চার্জ গঠন করে বিচারকাজ শুরু করেন।
মামলাটি বিচারের জন্য অত্র আদালতে স্থানান্তরিত হলে ১৪ বছরের মাথায় এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।