সুরমা টাইমস ডেস্ক :
আসামিকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে বলে প্রথমে আসামির স্ত্রীকে ভয় দেখানো হতো। এরপর ক্রসফায়ার থেকে মুক্তি দেওয়ার শর্ত হিসেবে সামনে প্রস্তাব রাখত শারীরিক সম্পর্কের। স্বামীকে বাঁচাতে র্যাব কর্মকর্তার সঙ্গে করতে হতো মিলন।
এভাবে ভয় দেখিয়ে রোজা ভাঙিয়ে এক নারীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে আলেপ উদ্দিন নামে তৎকালীন র্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এই নারীর স্বামীকে আটকে রেখে বারবার সেই নারীকে ধর্ষন করে আলেপ উদ্দীন।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ‘খলনায়ক’ হিসাবে পরিচিত অতিরিক্ত এসপি আলেপউদ্দিন। খোদ বাহিনীর মধ্যেই কুখ্যাতি পেয়েছিলেন ‘টার্গেট শুটার’ নামে।
আবার কেউ কেউ বলতেন তিনি মানুষরূপী সাক্ষাত্ ‘জল্লাদ’। র্যাব-১১এ (নারায়ণগঞ্জ) থাকাকালীন ক্রসফায়ারের নামে দুহাতে অস্ত্র চালিয়ে মানুষ হত্যা করতেন।
এমনকি ভালো মানুষকে জঙ্গি হিসাবে গ্রেফতার করে ক্রসফায়ার দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আসামির স্ত্রীকে ধর্ষণ করার মতো জঘন্য অপরাধও তিনি করেছেন। জিম্মি করে দফায় দফায় ধর্ষণ করার ফলে এক পর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ভুক্তভোগী মারা যায়।
এদিকে গা শিউরে ওঠা নানা অপকর্মের পরও তাকে দেওয়া হয়েছিল রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পিপিএম (প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল) ও বিপিএম (বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল) পদক।
এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি। জঙ্গি দমনের নামে অনেককে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছেন তিনি। পুলিশ ও র্যাবের একাধিক সূত্রে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য পাওয়া যায়।
আলেপ উদ্দীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পর থেকে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
গতকাল সোমবার (১৭ই ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ সম্পর্কিত আলজাজিরার সাংবাদিক মউদুদ সুজনের একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন।
সেই পোস্টে মউদুদ সুজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গুম হওয়া স্বামী বলছেন পবিত্র শবে কদরের দিন রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষন করা হয় তার স্ত্রীকে।
এর আগেও প্রায় তিনবার ধর্ষন করা হয়েছে স্বামীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে। শেষবার ধর্ষনের পর স্ত্রীর মানসিক অবস্থার অবনতি হয় এবং কিছুদিন পরে মৃত্যুবরন করেন ‘
সেই পোস্টে ধর্ষকের নাম জানিয়ে লিখা হয়, ‘ধর্ষক র্যাবের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা, নাম আলেপ।
স্বামী সবকিছু হারিয়ে যখন আলেপকে বারবার ফোন দিতে থাকে আলেপ রিপ্লাইয়ে জানান, ‘‘বন্দি মেয়ে বা বন্দি পুরুষদের স্ত্রীদের সাথে এমন আচরণ এখানে অলিখিতভাবে স্বীকৃত ’’……..।’
মউদুদ সুজন সেই র্যাব কর্মকর্তার বিচার চেয়ে লিখেন, ‘মানুষ কতটা নিচুতে নামলে নিজের মা/ স্ত্রী/মেয়ে থাকা সত্ত্বেও একজন বন্দির স্ত্রীকে এমনভাবে ট্রিট করে! এই র্যাব কর্মকর্তা আলেপের বিচার সবার আগে হওয়া উচিত।’