সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সংবাদ সম্মেলন
সুরমা টাইমস ডেস্ক :
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ে দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন সংগ্রাম করেছে বিএনপি।
আমরা হতবাক হয়ে দেখেছি গত ২৯শে জানুয়ারি সিলেটের একটি আদালত থেকে একাধিক মামলায় জামিন নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক কাউন্সিলর রেজওয়ান ও তার ভাই কামরান।
আইনজীবীদের সাথে আলাপ করে আমরা জানতে পারি যে, উক্ত আদালতের জামিন দেয়ার কোন এখিতিয়ার ছিল না। তা সত্ত্বেও একই আদালত থেকে ৫টি মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে।
এতে স্পষ্টত বোঝা যায় পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনো সিলেটের আদালতসহ বিভিন্ন জায়গায় বহাল তবিয়তে আছে। ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিজমের দোসরদের প্রতি আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।
তারা যদি ভবিষ্যতে আইন অঙ্গন ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা করে তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা তা প্রতিহত করবো।
আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখেছি এদেশের মানুষের ওপর জুলুমকারী পতিত স্বৈরাচারের দোসররা কিভাবে একদিনেই সবকটি মামলায় জামিন পেয়েছেন।
আদালতে স্বৈরাচারের দোসরদের প্রত্যক্ষ মদদ ছাড়া যা কোনভাবেই সম্ভব ছিল না। আদালতের বিচারকরা তাদের মনগড়া জামিন দিচ্ছেন, যা হতাশাজনক।
এছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন প্রশাসনিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না। যা নিয়ে সিলেটের সচেতন মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
গত ৩০শে জানুয়ারি সিলেটের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ৫টি মামলায় সাবেক কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ ও তার ভাই কামরান আহমদের জামিন পাওয়ার পর থেকে সিলেটজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্যাসিজমের দোসররা যেভাবে একের পর এক জামিন পাচ্ছেন, তা সত্যিই দুঃখজনক।
এতে করে সাধারণ মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে যে, গণহত্যাকারী এবং তাদের দোসরদের যথাযথ বিচার হবে কী? আপনারা জানেন, জিআর মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকে পুলিশ, আসামী জামিন চাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিষয়টি আদালতের পিপি’র জানার কোনো সুযোগ থাকে না।
ঐদিনেও রেজওয়ান ও তার ভাই ৫টি মামলায় জামিন চাওয়ার খবর জানার সাথে সাথে আদালতের পিপিগণ জামিনের আপত্তি করেন এবং বিএনপির কোন আইনজীবী আসামীদের পক্ষে দাঁড়ান নি।
পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত প্রাঙ্গণে বিপুল সংখ্যক সংক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হন, তারা পাঁচটি মামলায় জামিনের প্রতিবাদ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এসময় আইনজীবী সহকারী সমিতির নির্বাচন পরিদর্শণের দরুণ আলালতে পূর্ব থেকে অবস্থান করা সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী সংক্ষুব্ধ জনগণকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
একথা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, তারা যদি সেসময় বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করতেন তাহলে আদালত প্রাঙ্গনে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারতো। সেটা হলে সিলেটের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হতো।
এক সঙ্গে পাঁচটি মামলায় জামিন পাওয়া নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারকের সঙ্গে দেখা করে সাথে সাথে প্রতিবাদ জানানো হয়।
পরবর্তীতে পিপি অফিসে এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ফ্যাসিজমের দোসরদের পাওয়া জামিন আইনিভাবে বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এ বিষয়ে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন।
ইতিমধ্যে সিলেট সহ সারা দেশে গতকাল শনিবার থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে যৌথ বাহিনী।
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে এই অভিযান শুরু করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
আপনারা দেখেছেন গত ৪ঠা আগস্ট সিলেটের বিভিন্নস্থানে প্রকাশে অগ্নি অস্ত্রে মহড়া দিয়েছে ফ্যাসিস আওয়ামী লীগের সস্ত্রাসীরা।
এই সকল সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও অগ্নি অস্ত্র উদ্ধার না করা হলে সিলেটের মানুষের মধ্যে সুস্থি ফিরবে না।
আমরা দাবী করছি অবিলম্বে এই সকল সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। আপনারা লক্ষ্যে করেছেন দেশে বিভিন্ন স্থানে নেয়া সিলেটের বিভিন্নস্থানে ভাংচুর করা হয়েছে।
সেই সকল গঠনা নিয়ে ইতিমধ্যে বিএনপি তাদের অবস্থান পরিস্কার করেছে। যার সাথে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের কোন সম্পৃক্তা নেই।
ঠিক সেই ভাবে আমরাও পরিস্কার করছি সিলেটের ভাংচুরের কোনো ঘটনার সাথে বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের কোনো সম্পৃক্তা নেই।
আমরা দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কাজের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে ১০জনকে বহিস্কার করেছি।
যদি দলের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কাজের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে সাথে সাথে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রায়োজনে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমরা আপনাদের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রশাসনে থাকা সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের বলতে চাই আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন।
যদি দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন তাহলে সিলেটের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না এবং যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। বিএনপি এর দায়ভার কোনভাবেই গ্রহণ করবে না। পরিশেষে আমাদের আমন্ত্রণে আপনারা কষ্ট করে আসার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি ডাঃ নাজমুল ইসলাম,
ডাঃ আশরাফ আলী, রহিম মল্লিক, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, আনোয়ার হোসেন মানিক, মামুনুর রশীদ মামুন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, নাদির খান,
মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব,রফিকুল ইসলাম রফিক, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট সাঈদ আহমদ, মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তারেক আহমদ খান,
জেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট বদরুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাঈদুর রহমান হিরু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান মোহন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল ইসলাম খায়ের, জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অর্জুন ঘোষ,
আহাদ চৌধুরী শামীম, মহানগর বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রহিম আলী রাসু, শফিক নূর, জেলা বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম,মহানগর বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেক,
জেলা বিএনপির সহ ক্রীড়া সম্পাদক সুমেল আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহ মানবাধিকার সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সদস্য আব্দুল মুনিম, মোঃ হারুনুর রশিদ, জাকির হোসেন পারভেজ, জেলা উলামা দলের আহবায়ক মৌলানা নুরুল ইসলাম প্রমুখ।