সারাবছর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন, গুনতে হবে বাড়তি টাকা

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

সারা বছর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। তবে ৩১শে জানুয়ারির পরে রিটার্ন জমা দিলে বকেয়া আয়করের ওপর ২ শতাংশ হারে জরিমানা গুনতে হবে বলে জানান তিনি।

গতকাল রোববার (২৬শে জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট বন্ধ হবে না। ৩৬৫ দিনই লোকজন দিতে পারবে। ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত যারা ট্যাক্স রিটার্ন দেবেন, তাদের ট্যাক্স ক্যালকুলেশন এক রকম হবে। এরপর যারা দেবেন, তারাও অনলাইনে দিতে পারবেন, তাদের অটোমেটিক্যালি এক্সট্রা বার্ডেন চলে আসবে।

সাধারণভাবে বছরের যে কোনো সময় আয়কর রিটার্ন জমার সুযোগ রয়েছে আইনে। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে গুনতে হয় জরিমানা। নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলে একজন করদাতারা আবেদন করে সর্বোচ্চ চার মাস সময় বাড়াতে পারেন।

যৌক্তিক কারণ ছাড়া নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে উপ-কর কমিশনার সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের ১০ শতাংশ জরিমানা আরোপ করতে পারেন। জরিমানার ন্যূনতম পরিমাণ এক হাজার টাকা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানাসহ কর পরিশোধ না করলে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করা হবে।

নির্ধারিত সময়ের পর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমায় জরিমানার পরিমান জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, যে ট্যাক্স বাকি থাকবে, সেটার ওপর প্রতি মাসে ২ শতাংশ। ম্যাক্সিমাম সিলিং ২৪ মাস। আমরা ৪৮ শতাংশের বেশি কারো কাছ থেকে ইন্টারেস্ট নেব না।

চলতি বছর অনলাইনে রিটার্ন জমার হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে পর্যন্ত অনলাইন রিটার্ন ১২ লাখ হয়েছে। আশা করছি, ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত এটা ১৪ লাখের কাছাকাছি যাবে।

কাস্টমসকে এখন ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহারের কথা তুলে ধরে আবদুর রহমান খান বলেন, একটা সময় ছিল, যখন বাংলাদেশের রাজস্বের প্রধান উৎস ছিল কাস্টমস।

তখন আয়কর দেওয়ার মত জনশক্তি ছিল। ভ্যাট ছিল না। তখন কেবল কাস্টমস থেকে রাজস্ব পেতাম। ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে মিডল ক্লাস, আপার মিডল ক্লাস, রিচ পিপুল গ্রুপ তৈরি হয়েছে। ধীরে ধীরে আয়কর আদায় বেড়েছে। আমরা ভ্যাট চালু করেছি। সেখান থেকেও বড় একটা রাজস্ব আসছে।

 

এখনো আমাদের দুই-তৃতীয়াংশ রাজস্ব পরোক্ষ কর থেকে আসে। এর মানে এই নয় যে, কাস্টমসের গুরুত্ব কমে গেছে। দেশের নিরাপত্তা ও ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের জন্য কাস্টমসের গুরুত্ব একই রকম রয়ে গেছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কাস্টমসে ট্যাক্স আরোপ করি, মূল উদ্দেশ্য রাজস্ব আহরণ নয়। আমার লোকাল ইন্ডাস্ট্রিকে গ্রো করতে চাই। বাইরের কম্পিটিটরকে নেগোশিয়েট না করলে লোকাল ইন্ডাস্ট্রি গ্রো করবে না।

 

আমাদের দেশের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য অনেক কিছু আমদানি রোধ করতে হয়। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাস্টমসকে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

অন্যদের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান ও অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।