সুরমা টাইমস রিপোর্ট : সিলেটের লামাকাজি এলাকায় খেজুরের রস পান করতে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ভোরে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে সিলেটের লামাকাজি এলাকায় এসেছিলেন তিন বন্ধু সৈয়দ মোখছেদ হাসান মহান, আব্দুল আজিজ সায়েম ও রফিকুল্লাহ মাহি। সঙ্গে ছিলেন সায়েমের চাচাতো ভাই তাহমিদ আহমদ ও তার বন্ধু হাফিজুর রহমান। খেজুরের রস পান করে প্রাইভেটকারে করে ভোরেই রওয়ানা দেন জাফলং ও জৈন্তাপুরের লাল শাপলার বিল দেখতে। সকাল ১০টার মধ্যেই সবকিছু ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। কিন্তু নিমিষেই সেই আনন্দ রূপ নেয়ে বিষাদে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে ধামড়ী এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনজন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আরও একজন। বাকি দুজনও রয়েছেন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
নিহতরা হলেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার তাকিকোনা গ্রামের সৈয়দ জুনেদ মিয়ার ছেলে সৈয়দ মোখছেদ হাসান মহান (২০), একই উপজেলার রাধানগর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল আজিজ সায়েম (২১) ও সিলেট নগরীর দক্ষিণ বাগবাড়ি এলাকার আব্দুল হাসিমের ছেলে হাফিজুর রশিদ (২০)।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন সায়েমের চাচাতো ভাই তাহমিদ আহমদ (২০) ও একই উপজেলার মণ্ডলীবোগ এলাকার জামিল আহমদের ছেলে রফিকুল্লাহ মাহি (২০। তারা সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।
নিহত মহান সিলেটের কমার্স কলেজ ও সায়েম ছাতকের টেনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
নিহত মহান ও সায়েমের বন্ধু ইউসুফ আহমদ ফারহান বলেন, ‘সায়েম তার বাবার প্রাইভেটকারে করে শুক্রবার ভোরে খেজুরের রস পান করতে ছাতক থেকে সিলেটের লামাকাজি যায়। সেখানে খেজুরের রস পান করে হরিপুরের দিকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরতে যায়। ফেরার পথেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল রাতে মহান ও সায়েমসহ আমরা সব বন্ধুরা একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। কিন্তু এভাবে আমাদের ছেড়ে তারা চলে যাবে ভাবতেই পারছি না।’
সিলেট-তামাবিল হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।