সিলেটে যুবদলের ‘গোয়েন্দা দল’, ছাড় পাচ্ছেন না ‘অপকর্মে’ জড়িতরা

সুরমা টাইমস ডেস্ক : সরকার পতনের পর থেকেই চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও চোরাকারবারি সিন্ডিকেটে নাম আসছে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কতিপয় কিছু নেতাকর্মীর। দলের হাইকমান্ড এসব ‘অপকর্মে’ জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক নানা ব্যবস্থা নিলেও থামছে না এসব কর্মকাণ্ড।

এমনকি সিলেটের বহুল আলোচিত ‘বুঙ্গা’র চিনি কারবারের সাথে যুবদলের বেশ কিছু নেতাকর্মী জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। যা সীমান্ত পথ দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে সিলেট শহরে আসে। তবে এবার এসব অভিযোগ তদন্তে সিলেটে এসেছে কেন্দ্রীয় যুবদলের ‘গোয়েন্দা দল’।

 জানা গেছে, শুক্রবার (১ নভেম্বর) সিলেটে এসেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের ‘গোয়েন্দা দলের’ সদস্যরা। দুদিনের তদন্ত শেষে তারা কেন্দ্রে গিয়ে জমা দেবেন প্রতিবেদন। তদন্তে অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে কোন নেতাকর্মীকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তারা।

সূত্র জানায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপর সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নানা অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ সামনে আসে। এরমধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত ২৭ অক্টোবর জেলা যুবদলের কোষাধ্যক্ষ মেহেদী হাসান সাজাই ও মহানগর শাখার সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আহমদকে বহিস্কার করে কেন্দ্র। সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলে একটি সূত্র জানিয়েছে, পাঁচ আগস্টের পর দলীয় যেসব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ ওঠেছে সেগুলো তদন্তে কেন্দ্র থেকে দুই সদস্যের একটি ‘গোয়েন্দা দল’ সিলেটে এসেছেন। এই দলে রয়েছেন- কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান ও সাবেক সদস্য আশরাফ জালাল খান মন। এদিকে সিলেটে পৌঁছে তারা জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন ও সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদকে সঙ্গে নিয়ে জেলার সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় যায় ‘গোয়েন্দা দল’। সেখানে কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তারা তদন্ত করেন।

 এ বিষয়ে সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়লে সিলেটে যুবদলের নেতাকর্মীরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাসাবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পাহারা দিয়েছেন। এরপরও কোথাও কোথাও যুবদলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্মের অভিযোগ ওঠে। তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করে এসব সুযোগসন্ধানীদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করেছি আমরা।

 তিনি বলেন, যুবদলের নেতাকর্মীদের উপর সংগঠন সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। কেউ যদি সংগঠন বিরোধী কোন কাজে জড়িত হন তবে তাকে রেহাই দেওয়া হবে না। তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতেই হবে।

 কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন,  যেখানেই দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে গোপন তদন্ত হচ্ছে। চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও চোরাকারবারের অভিযোগ তদন্তে সিলেটেও প্রতিনিধি দল এসেছে। ঢাকায় গিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তদন্তে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।