কানাডার নতুন নিয়মে দুশ্চিন্তায় সিলেটের শিক্ষার্থীরা!
নতুন বছর অর্থাৎ- ২০২৪ সাল থেকে কানাডার করা নতুন নিয়মে বিপাকে পড়েছেন সিলেটের তরুণ-তরুণীরা। এবার সিলেটের শিক্ষার্থীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট।
সোমবার (১ জানুয়ারি) থেকে বাংলাদেশিসহ বিদেশি শিক্ষার্থীদেরকে ব্যাংকে দ্বিগুণ অর্থ দেখাতে হবে বলে জানিয়েছে কানাডার সরকার। এ নিয়ম কার্যকরও শুরু হয়েছে। তবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাজের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার।
দেশটির অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মার্ক মিলার সম্প্রতি এ ঘোষণা দিয়েছেন।
কানাডার ব্রডকাস্টিং কোম্পানি সিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দুই দশক ধরে কানাডায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ব্যাংকে ১০ হাজার ডলার দেখাতে হতো। নতুন বছরে চালু হতে যাওয়া নিয়ম অনুসারে, এখন থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যাংকে ২০ হাজার ৬৩৫ ডলার দেখাতে হবে। এ অর্থ শিক্ষার্থীদের কানাডায় জীবনযাপনের নিশ্চয়তার জন্য।
মন্ত্রী মার্ক মিলার বলেছেন, কানাডায় পড়তে যাওয়ার জন্য যে যে শর্ত আছে, সেগুলোর সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয়ের বিষয়টি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমন্বয় করা হয়নি। এর ফলে কানাডায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে যাওয়া শিক্ষার্থীরা দেখতে পান, সেখানে থাকার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাঁদের কাছে নেই। তিনি বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাজের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়েও ইঙ্গিত দেন।
জানা যায়, বিদেশি শিক্ষার্থীরা এখন দেশটিতে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের অনুমতি পান। এ সময়সীমা বাড়ানোর দিকে যেতে পারে দেশটি।
অনেক দিন ধরেই সমালোচকেরা দাবি করে আসছেন কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত শিক্ষা নেই এমন বিদেশিদের সুযোগ দিয়ে আসছে এবং ওই বিদেশিদের কানাডায় কাজ করার ও স্থায়ী হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে মিলার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কানাডার প্রদেশ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি আসন্ন ফল সেমিস্টারের আগে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে না পারে, তাহলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভিসা সীমিত করা হবে। প্রদেশগুলোতে কিছু ডিপ্লোমা চালু আছে, যেগুলো কেবল নামমাত্র চলছে।
ক্যাম্পাসের বাইরে থাকার জায়গা দিতে পারবে এবং দায়িত্ব নিতে পারবে, এমন নিশ্চয়তা দিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির করানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়ার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান মিলার।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক ততসংখ্যক শিক্ষার্থীকেই পড়ার সুযোগ দেবে, যতজনের থাকা-খাওয়ার সুবিধা তারা দিতে পারবে।
এদিকে, ইদানীং সিলেটের তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কানাডায় যাওয়ার ঝোঁক বেড়েছে। তাই এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বড় দুঃসংবাদও বটে। শিক্ষার্থীও জানালেন তাদের শঙ্কার কথা।
কানাডার নতুন নিয়মে বিপাকের কথা জানিয়েছেন ওই দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সিলেটের মদীনার মার্কেট এলাকার বাসিন্দা নাবিলা জাহান। তিনি বলেন, বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সমস্যা সবসময়ে থাকে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা ছিল কানাডায়। বাড়তি অর্থের নিয়ম আমাদের প্রত্যাশাকে ম্লান করে দিয়েছে।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অনার্স শেষ করেই কানাডামুখী হওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু নতুন নিয়মে বাড়তি চাপ তৈরি হলো। ফলে ওই দেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।’