কিংবদন্তী বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৪তম প্রয়াণ দিবস আজ

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তী বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৪তম প্রয়াণ দিবস আজ। ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালের এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
দিবসটি উপলক্ষে শাহ আবদুল করিম পরিষদের আয়োজনে বাউল সম্রাটের নিজ বাড়ি দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে দোয়া ও করিম গীতি আসরের আয়োজন করা হয়েছে। দিনব্যাপি এই অনুষ্ঠানে সকলের দোয়া ও উপস্থিতি কামনা করেছেন বাউলের একমাত্র সন্তান শাহ নুরজালাল।

মানব প্রেমের মধ্য দিয়ে জগৎ সংসারকে আলোকিত আর সমাজের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তির স্বাদ দিতে প্রাণান্ত চেষ্টা করেছেন। আবদুল করিমের গানে সাম্যবাদী ধারার সুর ফুটে উঠেছে। নির্যাতিত মানুষের শোকগাথা, শোষণ-বঞ্চনা অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ, শাসিত ও শোষক গোষ্ঠীর কথাই বেশি রয়েছে। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান এই কিংবদন্তি বাউল।

 

১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজান দল গ্রামে জন্ম নেন শাহ আবদুল করিম। পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে পড়ালেখার সুযোগ হয়নি তার।

 

তবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়েও করিম ছিলেন স্বশিক্ষিত। প্রতিদিনের জীবন জাগতিক সুখ দুঃখ প্রেম ভালোবাসাকে আপন মহিমীয় তুলে ধরেছেন তার বাউল গানে। গানে গানে স্মরণ করেছেন স্রষ্টা ও তার সৃষ্টিকুলকে।

 

ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন স্বাধীকার আন্দোলনে বাউল সম্রাটের গান বাঙালিকে অনুপ্রেরণা জাগিয়েছে। ‘মরমী’ গান আর হৃদয় ছোয়া সুর তাকে হাওরের রাখাল বালক থেকে বাউল সম্রাটের আসনে আসীন করেছে। তিনি পেয়েছেন একুশে পদকও।

 

বাউল করিমের নিজ বসতভিটায় রেখে যাওয়া সংগীত বিদ্যালয়ের সংস্কার এবং প্রস্তাবিত বাউল একাডেমি নির্মাণে সরকার সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সংগীত অনুরাগীরা।

 

বাউল সম্রাট আবদুল করিমের ছেলে বাউল শাহ নূরজালাল করিম বলেন, আমার বাবা সারাজীবন দেশের মানুষ, মাটির জন্য গান লিখে গেছেন। তার গানে শোষণ বঞ্চিত মানুষের কথা লিখেছেন। অভাব অনটন দিন যাপন করলেও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তিনি। বাবার গান দেশ ও বিশ্ববাসীর সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা করা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। তার সৃষ্টি রক্ষায় সবার এগিয়ে আসতে হবে।

শাহ আব্দুল করিমের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে’’, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, গাড়ি চলে না, রঙ এর দুনিয়া তরে চায় না, তুমি রাখ কিবা মার ঝিলমিল ঝিলমিল করেরে ময়ুুরপংখী নাও, তোমরা কুঞ্জ সাজাও গোসহ বহু গান রচনা করেছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।