সুরমা টাইমস ডেস্ক :
পোশাক কারখানায় চাকরির কথা বলে সিলেটের দুই কিশোরীকে কক্সবাজারে পাচার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদেরকে দিয়ে করানো হতো দেহ ব্যবসা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪শে এপ্রিল) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী ওই দুই কিশোরী কক্সবাজার থেকে পালিয়ে সিলেটের শাহপরান থানায় এসে পুলিশের কাছে তাদের পাচারের লোমহর্ষক বর্ননা ও নির্যাতনের কথা জানায়।
বর্তমানে নির্যাতিতা ১৬ ও ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোরীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
ওই দুই কিশোরীর বাড়ি সিলেটের সদর উপজেলার পিরেরবাজার এলাকায়।
ওই দুই কিশোরীর ভাষ্যমতে, তাদের পাশের বাড়ির এক মহিলা তাদেরকে কক্সবাজারে গার্মেন্টসে কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বললে তারা রাজি হন।
গত ৭ই এপ্রিল তারা ওই মহিলার সাথে কক্সবাজারে গেলে প্রথমে তার ছেলে ইমনের বাসায় উঠে গোসল ও খাওয়া দাওয়া সাড়েন।
পরদিন তাদেরকে গার্মেন্টসে নেয়ার নাম করে কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ইমন তাদেরকে সেখানে রেখে চলে আসে।
তখন তারা এখানে কেন জানতে চাইলে হোটেল স্টাফরা তাদেরকে একটি কক্ষে নিয়ে বসে রাখে। তারপর সেখানে টানা ১৪ দিন তাদের উপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন।
এদিকে, মেয়েদের খোঁজ না পেয়ে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে গত ৯ই এপ্রিল শাহপরাণ থানায় জিডি করেন অভিভাবকরা।
বিষয়টি জানতে পেরে ওই মহিলা তাদেরকে বলে সিলেট এসে জিডি তুলে নিতে বলে এবং তার ছেলেকে বলে তাদের ছেড়ে দিতে।
তখন ইমন তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে বলে ‘আর কখনো কক্সবাজারে আসবি না’। বৃহস্পতিবার তারা হোটেল থেকে বের হয়ে সিলেটে আসেন।
ওই কিশোরীরা জানান, ওই ১৪ দিন আমরা আমাদের পরিবারের সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদেরকে ফোন হাতে দেয়া হতোনা।
দিনের পর দিন হোটেলে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
বিষয়টি ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানালে ওই দুই কিশোরিকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালের ওসিসিতে প্রেরণ করে।
তবে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। শাহপরাণ থানার ওসি মো. মনির হোসেন বলেন, পরিবারের লোকজনের সঙ্গে অভিমান করে দুই বান্ধবী কক্সবাজার পালিয়ে যায়।
এরপর তারা দুজনে বৃহস্পতিবার সিলেটে ফিরে আসে। এ ঘটনায় দুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা মিসিং ডায়েরি পেয়েছিলাম।
সে কারণে আমাদের তদন্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে তাদেরকে বুঝিয়ে ফেরত আসতে বলে এবং তারা ফিরে আসে। দুজনকেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হোটেলে নিয়ে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার বিষয়ে তিনি বলেন, এরকম কোনো কথা তারা আমাদের কাছে বলেনি।
এ ছাড়া এমন ঘটনার কোনো অভিযোগও আমরা পাইনি। আমরা যতটুকু জানি, পরিবারের নির্যাতনের শিকার হয়ে দুই বান্ধবী পালিয়েছিল।
তাহলে দুই কিশোরী ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি কেন এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।