টিকটকে পরিচয়। এরপর ধীরে ধীরে গভীর সম্পর্ক। তারপর বিয়ে। পাঁচ মাস পরেই ডিভোর্স। পরে আবারও বিয়ের সিদ্ধান্ত। কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষিকা তানিয়া এবং একই মাদ্রাসার বাবুর্চি আরিফের শেষ পর্যন্ত আর বিয়ে হয়নি। তার আগেই ঢাকার কেরানীগঞ্জের তানিয়াকে খুন করেন আরিফ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে খুনের কথা স্বীকারও করেছেন তিনি।
কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের ঝাউচর এলাকায় এক দোতলা বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ থেকে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তানিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় তানিয়াকে এমন সন্দেহের পর শুরু হয় তদন্ত। পাশের বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা মেলে সন্দেহজনক একজনকে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্তের পর গ্রেপ্তারের করা হয় আরিফ মিয়াকে। আরিফ মারা যাওয়া তানিয়ার সাবেক স্বামী।
আরিফ পুলিশকে জানান, তানিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ছয় মাস আগে টিকটকে পরিচয় হয়েছিল তাদের। পরে প্রেম। তারপর বিয়ে। তানিয়া একটি মাদ্রাসার শিক্ষিকা ছিলেন, সেই মাদ্রাসার বাবুর্চি ছিলেন আরিফ।
বিয়ের পাঁচ মাস পরেই ডিভোর্স হয়ে যায় তাদের মধ্যে। কিছুদিন পরেই আবারও তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়। পুনরায় তারা বিয়ে করতে চান। ঘটনার একদিন আগেই তারা ঝাউচরের ভাড়া বাসায় উঠেছিলেন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তানিয়ার সঙ্গে যার ঘনিষ্ঠতা ছিল, সেই ব্যক্তিকে শনাক্ত করি। পরবর্তীকালে দেখি যে তার মোবাইলটা বন্ধ। তখন আমাদের সন্দেহ আরও বেশি দৃঢ় হয়।
‘বন্ধ মোবাইলের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে আশকোনা থেকে আরিফ নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন’, যোগ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর আরও বলেন, বিয়ের পর আরিফ তার গ্রামের বাড়িতে তানিয়াকে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তানিয়া সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহের কারণে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে তানিয়া আবার আরিফকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। এক পর্যায়ে আরিফ আবার তানিয়ার কাছে ফেরত আসেন। কিন্তু তানিয়া তখন তাকে বলেন, তাকে বিয়ে করতে হবে। সেইসঙ্গে তার শর্ত অনুযায়ী সংসার করতে হবে। সেই কথার সূত্র ধরে আরিফ উত্তেজিত হয়ে তানিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরবর্তীকালে তার ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
খুনের পেছনে আর কোনো কারণ রয়েছে কিনা তদন্ত করছে পুলিশ।