মির্জা ফখরুলকে গ্রেফতার দেখানো হবে: ডিএমপির মুখপাত্র

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) মিন্টো রোডের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন।

আজ রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ মির্জা ফখরুলকে তার গুলশানের বাসা থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডিবির গুলশান ডিভিশনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হাফিজ আল আসাদ বলেন, মির্জা ফখরুলকে ‘জিজ্ঞাসাবাদের’ জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, আজ রবিবার সকালে রাজধানীর গুলশান-২-এর বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করে ডিবি।

পরে ডিবির গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার হাফিজ আল আসাদ বলেন, মির্জা ফখরুলকে তাঁরা নিয়ে এসেছেন।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, ডিবির গুলশান বিভাগ মির্জা ফখরুলকে আটক করেছে। তাঁকে ডিবির মিন্টো রোডের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পুরোনো মামলা আছে। গতকাল শনিবারের সহিংসতার ঘটনায়ও মামলা হবে। তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

বিএনপি মহাসচিবকে আটকের পর তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম বলেন, সকালে ডিবি পুলিশের লোকজন বাসায় আসে।

মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বাসার সবার সাথে কথা বলে, এরপর বাসা এবং ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও হার্ড ডিস্ক নিয়ে চলে যায়। ঠিক দশ মিনিট পর আবার ফিরে এসে মির্জা ফখরুলকে আটক করে নিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, মির্জা ফখরুল প্রচণ্ড অসুস্থ, তার চিকিৎসা চলছিল। ৭৫ বছর বয়সী একজনকে এভাবে নিয়ে যাবে মেনে নিতে পারছি না।

এর আগে বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শাইরুল কবির খান বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিবকে তার গুলশান ২-এর বাসা থেকে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।

সকালে বিএনপি মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার  জানান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তার গুলশানের বাসা থেকে তুলে নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ছিল। মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।

এই সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বেলা তিনটার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।

বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ জন সদস্য। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক। সংঘর্ষে হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির।

সংঘর্ষকালে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, বাস, মোটরসাইকেলসহ বেশ কটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশের হিসাবে, আগুন দেওয়া হয়েছে মোট ৫৫টি গাড়িতে। হামলা হয় কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে।

এ ছাড়া কাকরাইল, ফকিরাপুল, নাইটিঙ্গেল মোড় ও শান্তিনগর এলাকার সাতটি পুলিশ বক্স পোড়ানো হয়। কমলাপুরে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপির মহাসমাবেশে ‘পুলিশের হামলার প্রতিবাদে’ দলটি আজ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।