সুরমা টাইমস ডেস্কঃ
দেখতে দেখতে ১ বছর হয়ে গেল বলিউডের স্বনামধন্য গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নথের মৃত্যু। যাঁকে আমরা সবাই কেকে হিসেবেই চিনি। গত বছর কলকাতা নজরুল মঞ্চে গাইতে এসে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি, এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি।
কেকে-এর মৃত্যুতে একাধিক অভিযোগ উঠে আসে নজরুল মঞ্চের আয়োজকের বিরুদ্ধে। জানা যায়, গতবছর ৩১ মে নজরুল মঞ্চে শেঠ গুরুনানক কলেজের ফ্যাস্টে আমন্ত্রিত ছিলেন তিনি, হলে অতিরিক্ত ভক্তের ভিড়, এসি খারাপ হয়ে যাওয়া, সবেতেই গাইতে গাইতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
এরপর তড়িঘড়ি হাসপাতালে গেলে সেখানেই হৃদরোগে মারা যান কেকে।
তাঁর মৃত্যুতে সবথেকে বেশি কেঁদেছে তরুণ প্রজন্ম। কয়েকঘণ্টার মধ্যেই হাজার-হাজার মানুষকে ভাসিয়েছিলেন সুরের মূর্ছনায়, সেই লোকটাই না ফেরার দেশে আজ এক বছর হয়ে গেল। নব্বই দশকের বলিউডের একাধিক আইকনিক গান তাঁর কন্ঠে বাঁধা। যা আজও মানুষকে কাঁদায়। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁরই বন্ধুরা তাঁর একটি গান নতুন করে তৈরি করে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন।
মরদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, কেকের হার্ট প্রায় সাদা হয়ে গিয়েছিল। হার্টের উপর পড়েছিল মেদের আস্তরণ। হার্টের ভেতরের সব ভাল্ভ শক্ত হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকদের ভাষায়, এসব ‘ফ্যাটি হার্ট’-এর উপসর্গ।
বিপর্যয় বা গাফিলতির কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে বহু ক্ষেত্রে কড়া নিয়ম তৈরি হয়। কিন্তু সময় যত গড়ায়, সেই সব নিয়ম অনেক ক্ষেত্রেই শুধু খাতায়কলমে সীমাবদ্ধ থেকে যায় বলে অভিযোগ।
কলকাতায় কলেজ ফেস্টে গান করতে এসে বলিউড গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে-র মৃত্যুর ঘটনাতেও কি তেমনই ব্যাপার হয়েছে?
প্রশ্নটা উঠছে এবং জোরালো ভাবে উঠছে সম্প্রতি শহরের একাধিক প্রেক্ষাগৃহে হওয়া জলসার পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে। যেখানে উপস্থিত অধিকাংশেরই অভিযোগ, ‘‘অনুষ্ঠানের আনন্দে গা-ভাসানোর নামে নিয়ম ভাঙার রোগ চলছেই। দর্শকের আব্দার মেটানোর নামে একই ভাবে ভুগতে হচ্ছে শিল্পীদের।’’
গত বছরের ৩১ মে নজরুল মঞ্চে উত্তর কলকাতার একটি কলেজের অনুষ্ঠানে গান গাইতে এসেছিলেন কেকে। সেখানে পুলিশ এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে দর্শকদের একাংশের রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। আড়াই হাজার আসনবিশিষ্ট ওই প্রেক্ষাগৃহে প্রায় তিন গুণ দর্শক ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ। শেষে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হলে শুরু হয় বাঁশ, ইট, পাথর ছোড়া। তার মধ্যেই রীতিমতো ঘামতে ঘামতে অনুষ্ঠান করতে দেখা যায় কেকে-কে।
অনুষ্ঠান শেষে হোটেলে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিল্পী। মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরেই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা এবং নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠে। অব্যবস্থার একাধিক অভিযোগে মামলা হয় আদালতে। নিউ মার্কেট থানাও মামলা রুজু করে তদন্তে নামে।