“পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও ধর্মীয় সমাবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনায় আর্টিকেল নাইনটিনের উদ্বেগ প্রকাশ”

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও তাদের ধর্মীয় সমাবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি মনে করে, সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পৌনঃপুনিকভাবে ঘটে চলা ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ভিন্ন বিশ্বাসের মানুষের উপর হামলার ঘটনা ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা-বিদ্বেষেরই বহিঃপ্রকাশ।

 

আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আর্টিকেল নাইনটিন এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ অণুচ্ছেদে রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। পাশাপাশি সংবিধান প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ-সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার দিয়েছে। দেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ও নির্ভয়ে যার যার ধর্ম পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

 

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষদেরও সহনশীল এবং  অন্তর্ভূক্তিমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করায় ব্যাপক ভূমিকা আছে। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মহানবী হজরত মুহম্মদ (সাঃ) কর্তৃক মদিনায় কলহে লিপ্ত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি স্থাপন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে  প্রণয়িত সনদে বলেছেন, মুসলিম, খ্রীস্টান, ইহুদী, পৌত্তলিক ও অন্যান্য সম্প্রদায় ধর্মীয় ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। কেউ কারো ধর্মীয় কাজে কোন রকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। তারা পরষ্পর বন্ধুসুলভ আচরণ করবে। পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের উপর হামলা মদিনা সনদের পরিপন্থী।”

 

উল্লেখ্য গত ৩ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড়ের আহম্মদনগরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ৩ দিনের সালানা জলসার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি বাতিলের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন ও সমমনা ধর্মীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা জুমার নামাজের পর শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে ২ জন নিহত এবং ৭ পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ৫০ জন আহত হন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১৫০টি বাড়িতে ভাঙচুর, আগুন ও লুটপাট চালানো হয়।

 

আর্টিকেল নাইনটিন সরকারের প্রতি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের উপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানায় এবং এই ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন অবহেলা আছে কিনা তা স্বচ্ছতার সাথে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে নির্ভয়ে ও বিনাবাধায় তাদের ধর্ম পালন করতে পারে তার জন্য জাতিসংঘের সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের নীতি প্রতিষ্ঠিত করে একটি সহনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।