সালুটিকর বধ্যভূমিতে শহীদ স্মৃতি উদ্যানের উদ্বোধন শনিবার

একাত্তরের গণহত্যার স্মৃতিকে জীবন্ত করে তুলে ধরতে সিলেটে নির্মিত হয়েছে শহীদ স্মৃতি উদ্যান। সিলেটের সালুটিকর বধ্যভ‚মিতে নির্মিত এ স্মৃতি উদ্যানের উদ্বোধন করবেন শহীদজায়া সৈয়দা সখিনা আব্দাল। বৃহস্পতিবার সিলেট নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান শহীদ স্মৃতি উদ্যান বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য কর্নেল মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বীর প্রতীক। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় শনিবার (৪ মার্চ) এ স্মৃতি উদ্যানের উদ্বোধন শেষে শহীদ মিনারে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শহীদ স্মৃতি উদ্যানের অন্যতম উদ্যোক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জিয়াউদ্দিন আহমদ, সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সালুটিকর বধ্যভ‚মি একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার স্মৃতি ধরে আছে। ঐতিহাসিক গুয়েতেমালার চেয়েও জঘন্য টর্চার সেল ছিল সিলেট ক্যাডেট কলেজের পাশের এ বধ্যভূমি।

কিন্তু স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও স্থানটি অযত্ন অবহেলায় পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সাধারণ জনগণের ত্যাগকে সবার সামনে তুলে ধরতেই শহীদ স্মৃতি উদ্যান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে স্মৃতি উদ্যানে ৬৬ জন শহীদের নামফলক বসানো হয়েছে। পরবর্তীতে আরও শহীদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদেরও নামফলক যুক্ত করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জিয়াউদ্দিন আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারগুলোকে নিয়ে কেউ কিছু ভাবছেন না।

তাদের নিয়ে তেমন কোনো কাজ হয়নি। বাংলাদেশে যে একাত্তরে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে তা বহির্বিশ্বের মানুষ জানেনই না। গণহত্যার বিষয়টি আমাদের আরও ব্যাপক প্রচার করতে হবে। শহীদ পরিবারের অনেক সদস্যই মানসিক সমস্যায় ভুগতে ভুগতে মারা যাচ্ছেন। অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এগুলো তুলে ধরতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুস সালাম বলেন, সেনাপ্রধানের অনুমতিসাপেক্ষে সেনাবাহিনীর সিলেট এরিয়া কমান্ডার ও সিলেট ক্যাডেট কলেজ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বেসরকারি খাতের উৎস থেকে শহীদ স্মৃতি মেমোরিয়াল গার্ডেন ও বধ্যভূমির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখানে ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, তথ্য উপাত্তসহ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ এবং
এলাকটিকে নান্দনিক রূপ দিয়ে পর্যটকদের কাছে উপস্থাপনার পরিকল্পনা চলছে^। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে শুধুমাত্র বইপত্রে সীমাবদ্ধ করে রাখলে তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছবে না, একাত্তরের সাধারণ মানুষের কাছে দৃশ্যমান করে তুলতে হবে। তখনই নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধকে জানতে আগ্রহী হবে।

 

=বিজ্ঞপ্তি ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।